অভিক্ষিপ্ত স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা
ভূমিকাঃ
মানচিত্র অভিক্ষেপ
(Map Projection) হল ভৌগলিক অবস্থানের
(অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ)
বর্তুল (ত্রিমাত্রিক পৃষ্ঠ)
থেকে পরিকল্পক
(দ্বিমাত্রিক পৃষ্ঠ)
স্থানাঙ্কে নিয়মানুগ
(গাণিতিক)
রূপান্তর। সহজ কথায়,
মানচিত্র অভিক্ষেপ হল পৃথিবীর বাঁকা পৃষ্ঠকে
(curved surface) মানচিত্রে সমতল পৃষ্ঠতলে
(flat surface) উপস্থাপন করার একটি উপায়।
বাস্তব বর্তুল
(spherical) বিশ্বের কোন কিছুর অবস্থান কৌণিক দূরত্বের
(অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ)
মাধ্যমে বর্ণিত হয়। কিন্তু সমতল মানচিত্রে কোন কিছুর অবস্থান কার্তেসীয় স্থানাংক ব্যবস্থার
(‘X’ এবং
‘Y’) মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়
(নিচের ছবিটি দেখুন)।
কোন কিছুর অবস্থান নির্ণয় করার জন্য,
‘ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা’
একটি ত্রিমাত্রিক পৃষ্ঠতল ব্যবহার করে এবং
‘অভিক্ষিপ্ত স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা’
একটি দ্বিমাত্রিক পৃষ্ঠতল ব্যবহার করে।
এখন সমস্যা হল,
এই অনিয়মিত আকৃতির ত্রিমাত্রিক পৃথিবীর পৃষ্ঠকে একটি সমতল ও দ্বিমাত্রিক কাগজের টুকরায়
(Map) স্থানান্তর করা। নানাবিধ গাণিতিক ও জ্যামিতিক উপায়ে,
মানচিত্র অভিক্ষেপ,
এই রূপান্তর করা হয়ে থাকে। কিন্তু জেনে রাখা ভাল যে, কোনরূপ বিকৃতি
(Distortion) ব্যতীত এই রুপান্তর সম্ভব নয়। প্রতিটি অভিক্ষেপ
(Projection)-এর নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধাসমূহ আছে।
প্রতিটি সমতল মানচিত্রই কোন না কোনভাবে ভূপৃষ্ঠের ভুল বর্ণনা দিয়ে থাকে। আজ পর্যন্ত এমন কোন মানচিত্র অঙ্কিত/
আবিষ্কৃত হয়নি,
যা সমগ্র পৃথিবীকে ১০০%
সঠিকভাবে উপস্থাপিত করে।
কেন এই বিকৃতি?
উপরের ছবিটিতে বিষুবরেখা বরাবর পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানসমূহ দেখা যাচ্ছে। এইখানে কেন্দ্রিয়
(central) এলাকা যদিও পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে,
কিন্তু প্রান্তিক এলাকাসমূহ
(edges shapes) বিকৃতরূপে দৃশ্যমান।
আবার নিচের ছবিটিতে
‘এন্টার্কটিকা’
এবং ‘অস্ট্রেলিয়া’ দেখা যাচ্ছে ভিন্নভাবে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে,
একই স্থান বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ এবং অবস্থান
(Angle & Position) থেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়।
মৌলিক অভিক্ষেপণ প্রযুক্তিঃ
সহজ কথায়,
মানচিত্র অভিক্ষেপণের মাধ্যমে আমরা ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থাকে
(অক্ষাংশ
‘φ’ এবং দ্রাঘিমাংশ
‘λ’) কার্তেসীয় স্থানাংক ব্যবস্থায়
(‘x’ এবং
‘y’) রুপান্তর করব। এখন আসা যাক,
এই মানচিত্র অভিক্ষেপ কিভাবে করা হয়?
খুব সাধারণভাবে বলতে গেলে,
প্রথমে এই পদ্ধতিতে একটি কল্পিত কাগজের টুকরাকে
(যা পরবর্তীতে একটি মানচিত্রে পরিণত হবে)
পৃথিবী পৃষ্ঠে অধিশায়িত
(laid) করা হয়
(নিচের ছবিটি দেখুন)।
এখন এই কল্পিত কাগজের টুকরাটি
(Map Plane/ Developable Surface) ভূপৃষ্ঠের যেখানে স্পর্শ করবে,
সেইখানে বিকৃতি
(Distortion) হবে শূন্য এবং দূরত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে বিকৃতিও বৃদ্ধি পাবে
(নিচের ছবিটি দেখুন)। এরপর কিছু প্রতিষ্ঠিত গাণিতিক সমীকরণের মাধ্যমে
[(x, y) = f (φ, λ)] এই রুপান্তর করা হয়।






No comments