মানচিত্র অভিক্ষেপণের শ্রেণীবিভাগ
মানচিত্র অভিক্ষেপ নিম্নলিখিত ৪টি উপায়ে শ্রেণীবিন্যাস করা যায়ঃ
১. Developable
Surface:
এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে মানচিত্র অভিক্ষেপণের মাধ্যমে মানচিত্র প্রস্তুতকরণের তিনটি মৌলিক পদ্ধতি আছে। এগুলো হল
(নিচের ছবি তিনটি দেখুন):
Azimuthal/ Planar: এক্ষেত্রে কল্পিত কাগজের টুকরাটি হয়
‘সমতল’ আকৃতির।
Conical: এক্ষেত্রে কল্পিত কাগজের টুকরাটি হয়
‘মোচাকৃতি’।
Cylindrical: এক্ষেত্রে কল্পিত কাগজের টুকরাটি হয়
‘বেলনাকার’।
এই ক্ষেত্রে একটা কথা জেনে রাখা ভাল। কাল্পনিক এই তল
(Developable Surface) পৃথিবীর যেখানে স্পর্শ
করে, ঠিক সেখানকার অক্ষাংশকে-
‘Standard Parallel’ এবং দ্রাঘিমাংশকে-
‘Central Meridian’ বলা হয়
(নিচের ছবিটি দেখুন)।
২. Point
of Contact:
এইখানে দুই ধরণের শ্রেণী
(Class) আছে।
১. Tangent
তলঃ
এই শ্রেণীর
‘Developable’ তলটি;
‘Azimuthal’-এর ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠের একটি মাত্র বিন্দুকে স্পর্শ করে (Touch),
আর
‘Conical’ এবং
‘Cylindrical’-এর ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠের একটি রেখাকে স্পর্শ করে (নিচের ছবিটি দেখুন)।
২. Secant
তলঃ
এই শ্রেণীর
‘Developable’ তলটি;
‘Azimuthal’-এর ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠকে একটি রেখা দ্বারা ছেদ করে (Intersect),
আর
‘Conical’ এবং
‘Cylindrical’-এর ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠকে দুইটি রেখা দ্বারা আড়াআড়িভাবে ছেদ করে (নিচের ছবিটি দেখুন)।
৩. অভিক্ষেপ সমতলের অভিমুখঃ
ভূগোলকের সাপেক্ষে অভিক্ষেপ সমতলের
(Projection Plane’s) অভিমুখ
(Orientation) বিবেচনা করে তিন ধরণের শ্রেণীবিভাগ হতে পারেঃ
Normal: এই ক্ষেত্রে অভিক্ষেপ সমতলের অভিমুখ পৃথিবীর অক্ষের সমান্তরালে
(Parallel) থাকে।
Transverse: এই ক্ষেত্রে অভিক্ষেপ সমতলের অভিমুখ পৃথিবীর অক্ষের সাথে সমকোণে
(Perpendicular) থাকে।
Oblique: সকল ধরণের অসমান্তরাল এবং তির্যক অভিমুখসম্পন্ন তল এই ধরণের শ্রেণীর অধীনে।
৪.
বিকৃতির বৈশিষ্ট্যঃ
আমরা এতক্ষণে বুঝে গিয়েছি যে মানচিত্র অভিক্ষেপণের ফলে বিকৃতি ঘটবেই। এখন প্রশ্ন হল মূল বাঁকানো ভূগোলকের সাপেক্ষে কি ধরণের হবে এই বিকৃতি?
মানচিত্র অভিক্ষেপণের ফলে সাধারণত নিম্নলিখিত ৪ টি মৌলিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন বিকৃতি
(Distortion) হয়ঃ
অভিমুখ
(Direction)
দূরত্ব
(Distance)
আকার-আকৃতি (Shape)
আয়তন/
ক্ষেত্র
(Size/ Area)।
বিকৃতির এই বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে চার ধরণের উপশ্রেণী হতে পারেঃ
Azimuthal: ইহা একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রিয় বিন্দু
(Central Point) থেকে অন্য কোন বিন্দুর অভিমুখ
(Direction) সঠিকভাবে প্রদর্শন করে।
Conformal: ইহার প্রতিটি বিন্দুতে কোণ
(Angle) সংরক্ষিত থাকে।
Equal-Area: এই অভিক্ষেপ কোন কিছুর
(feature) ক্ষেত্র/
আয়তন ঠিক রাখে।
Equidistant: ইহা দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দুর মধ্যকার দূরত্ব অক্ষুণ্ণ রাখে।
সঠিক মানচিত্র অভিক্ষেপ নির্বাচনঃ
যে কোন ধরণের মানচিত্র তৈরির প্রথম শর্ত হল,
একটি যথাযথ মানচিত্র অভিক্ষেপ
(map projection) এবং এর পরামিতিসমূহ
(parameters) নির্ধারণ করা। এই কাজ একজন মানচিত্রকার
(Cartographer) করে থাকেন। এখন প্রশ্ন হল,
কিভাবে কোন একটি নির্দিষ্ট/
বিশেষ এলাকার জন্য যথাযথ মানচিত্র অভিক্ষেপ বাছাই করা সম্ভব?
ইহা নিম্নলিখিত তিনটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা যেতে পারে:
১.
এলাকার আকার/আকৃতিঃ
অভিক্ষেপের ধরণ কি হবে তা নির্ভর করে ঐ নিদিষ্ট এলাকার আকৃতির
(Shape) উপর।
‘Cylindrical’ অভিক্ষেপ সাধারণত আয়তক্ষেত্রাকার
(Rectangular) এলাকার জন্য,
‘Conic’ অভিক্ষেপ ত্রিকোণী
(Triangular) এলাকা এবং
‘Azimuthal’ অভিক্ষেপ গোলাকার
(Circular) এলাকার জন্য ব্যবহৃত হয়
(নিচের ছবিটি দেখুন)।
২. এলাকার অবস্থানঃ
নির্দিষ্ট এলাকার অবস্থান
(Location) এবং অভিযোজন
(Orientation)-এর উপর নির্ভর করেও সঠিক মানচিত্র অভিক্ষেপ নির্ণয় করা হয়। সবচেয়ে উত্তম অবস্থা হল,
যখন অভিক্ষেপ কেন্দ্র
(Projection Centre) ঐ নির্দিষ্ট এলাকার কেন্দ্রের সঙ্গে সমানুপাতিকভাবে
(Coincide) থাকে।










No comments